তালাকের নোটিশ পাঠানোর নিয়ম জানা না থাকলে তালাক আইনগতভাবে কার্যকর হয় না। বাংলাদেশে মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী তালাক দিতে হলে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে লিখিত নোটিশ পাঠানো বাধ্যতামূলক। এই ব্লগে তালাকের নোটিশ পাঠানোর নিয়ম, সময়সীমা, কাগজপত্র ও নোটিশ না পাঠালে কী হয়—সব সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
তালাকের নোটিশ কী এবং কেন প্রয়োজন
তালাকের নোটিশ হলো স্বামীর পক্ষ থেকে প্রদত্ত একটি লিখিত ঘোষণা, যা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে পাঠাতে হয়।
Muslim Family Laws Ordinance, 1961 অনুযায়ী এই নোটিশ ছাড়া তালাক আইনগতভাবে সম্পূর্ণ হয় না।
সরকারি আইনগত কাঠামো সম্পর্কে জানতে আইন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট দেখতে পারেন:
🔗 https://minlaw.gov.bd
তালাকের নোটিশ পাঠানোর নিয়ম
নোটিশ প্রস্তুত করা
নোটিশে থাকতে হবে—
স্বামী ও স্ত্রীর নাম ও ঠিকানা
বিয়ের তারিখ
তালাক দেওয়ার স্পষ্ট ঘোষণা
তারিখ ও স্বাক্ষর
রেজিস্টার্ড ডাকের মাধ্যমে পাঠানো
নোটিশ রেজিস্টার্ড ডাকযোগে পাঠানো উচিত এবং রসিদ সংরক্ষণ করতে হবে।
তালাকের নোটিশ কোথায় পাঠাতে হয়
তালাকের নোটিশ পাঠাতে হয় স্ত্রীর বর্তমান ঠিকানার আওতাধীন—
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা
সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর
একই সঙ্গে স্ত্রীকেও নোটিশের একটি কপি দিতে হয়।
তালাক কার্যকর হওয়ার সময়সীমা
চেয়ারম্যান/মেয়র নোটিশ পাওয়ার ৯০ দিন (৩ মাস) পর তালাক কার্যকর হয়, যদি এই সময়ে পুনর্মিলন না হয়।
স্ত্রী গর্ভবতী হলে ইদ্দতকাল অনুযায়ী সময় গণনা হবে।
তালাকের নোটিশ না পাঠালে কী হয়
তালাকের নোটিশ না পাঠালে—
তালাক আইনগতভাবে কার্যকর হয় না
দেনমোহর ও ভরণপোষণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়
পুনর্বিবাহ আইনগত ঝুঁকিতে পড়ে
ভবিষ্যতে মামলা-মোকদ্দমার সম্ভাবনা থাকে
এ কারণে তালাকের নোটিশ পাঠানোর নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তালাকের নোটিশের জন্য কী কী কাগজপত্র লাগে
সাধারণত প্রয়োজন হয়—
নিকাহনামার কপি
জাতীয় পরিচয়পত্র
ঠিকানার প্রমাণ
তালাকের নোটিশ ড্রাফট
আইনজীবীর মাধ্যমে করলে এসব কাগজপত্র সঠিকভাবে যাচাই হয়।
বিস্তারিত গাইড দেখুন:
FAQ: তালাকের নোটিশ পাঠানোর নিয়ম
প্রশ্ন ১: নোটিশ ছাড়া তালাক কি বৈধ?
না, নোটিশ ছাড়া তালাক আইনগতভাবে বৈধ নয়।
প্রশ্ন ২: তালাক কার্যকর হতে কত সময় লাগে?
সাধারণত ৯০ দিন।
প্রশ্ন ৩: আইনজীবী ছাড়া নোটিশ পাঠানো যায়?
যায়, তবে ভুল হলে তালাক বাতিল হওয়ার ঝুঁকি থাকে।